মুর্শিদাবাদ : সৌদি আরবে কাজে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন (Bengal Worker in Trouble) বাংলা’র ৩ যুবক। প্রায় আট মাস কাজ করা সত্ত্বেও কোনও টাকা না পাওয়ায় তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না। গত দু’সপ্তাহের বেশি মসজিদ ও স্থানীয় মানুষের দয়ায় কোনওরকমে রয়েছেন তাঁরা।
সেখান থেকে এক ভিডিও বার্তায় বাড়ি ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারের কাছে কাতর আবেদন জানিয়েছেন বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদের লালগোলার আয়েরমারির নামুপাড়ার দুঃস্থ পরিবারের তিন যুবক। তিন যুবকের ফেরার অপেক্ষায় উৎকন্ঠার দিন গুনছেন তাঁদের পরিবারের লোকজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ন’মাস আগে লালগোলা ব্লকের আয়েরমারি নামুপাড়ার রুহুল আমিন, মহম্মদ আরিফ শেখ ও সম্রাট আলি সৌদি আরবের রিয়াধে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে যান। স্থানীয় একটি এজেন্সির মাধ্যমে নির্মাণ সংস্থার অধীনে কাজ শুরু করেন। অভিযোগ সাত-আট মাস পরও এজেন্সি কোনও পারিশ্রমিক দিচ্ছিল না।
টাকা চাইতেই তিন যুবকের সমস্ত কাগজপত্র কেড়ে নেওয়া হয়। পাশাপাশি কাজ থেকে ছাড়িয়ে দিয়ে এজেন্সির লোকেরা বেপাত্তা হয়ে যায়। ওই পরিস্থিতিতে তিন যুবক কোনওদিন আধপেট বা কোনদিন না খেয়ে দিন গুজরান করছেন। সৌদি আরব থেকে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় লালগোলার তিন যুবক বলেছেন, আট মাস কাজ করার পরও এজেন্সির লোকেরা
কোনও টাকাপয়সা দেয়নি। বরং ভারতে ফেরার সমস্ত কাগজপত্র কেড়ে নিয়েছে। কার্যত রাস্তায় দিন কাটছে। স্থানীয় একটি মসজিদ থেকে মাঝেমধ্যে খাবার দেওয়া হচ্ছে। রাস্তায় গেলেও মাঝেমধ্যে খাবার মিলছে। সবমিলিয়ে অন্যের দয়ার উপর বেঁচে রয়েছি। ভারত সরকার আমাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।
রুহুলের মা আয়েসা বিবি বলেন, সংসারের হাল ধরতে ছেলে ধারদেনা করে আরবে গিয়েছিল। আট মাস কাজ করলেও এক টাকাও দেয়নি। বাড়ি ফিরে আসতে চাইলে এজেন্সির লোকজন ৩০হাজার টাকা চেয়েছিল। আমরা গরিব মানুষ, কোথা থেকে টাকা পাব। সরকার ছেলেদের ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।
সম্রাটের স্ত্রী সেনুজা খাতুন বলেন, স্বামী সহ তিনজন কোথায়, কীভাবে আছে কিছু জানতে পারছি না। ফোনেও যোগাযোগ করতে পারছি না। খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটছে। আয়েরমারির বাসিন্দা মিরাজ শেখ বলেন, ভালো রোজগারের আশায় গরিব, দুঃস্থ পরিবারের ছেলেরা জমি, সোনা বিক্রি বা ধারদেনা করে আরবে যায়। ওখানে গিয়ে এভাবে প্রতারণার শিকার হলে খুব চিন্তার বিষয়। লালগোলার বিডিও সুব্রত ঘোষ বলেন, এবিষয়ে আমাদের কাছে এসে কেউ কিছু জানাননি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।