দীপক প্রধান, হলদিয়া : হলদিয়া পৃথক দুটি বজ্রপাতের ঘটনায় ২ মহিলা সহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার ভবানীপুর থানার দেভোগ অঞ্চলের বড়বাড়ি গ্রামে (Haldia)। মৃত দুই ব্যক্তির নাম পিন্টু বেরা (৫০) ও সমরেশ বেরা (৪৫)। অন্যদিকে হলদিয়ার সুতাহাটা থানার কসবেড়িয়া গ্রামে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে মামনী মালী (৪০) নামের এক গৃহবধূর। অন্যদিকে সুতাহাটার হোড়খালী গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বেগুনাবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রাধারানী ভৌমিক (৫৪) এদিন বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে। গোটা ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন বিকেল নাগাদ সমরেশের জমিতে ধান রোয়ার কাজ চলছিল। সেখানেই গিয়েছিলেন গ্রামের বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। সেই সময় প্রচন্ড গতিতে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। চলতে থাকে মুহুর্মুহু বজ্রপাত। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তাঁরা সকলেই মাঠের পাশের একটি বড় গাছের তলায় আশ্রয় নেয়। তারই মাঝে ওই গাছেই বাজ পড়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ২ জন বাঁধের গায়ে এলিয়ে পড়ে। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে বাকীরা গ্রামে গিয়ে খবর দিলে দলে দলে লোকেরা মাঠে ছুটে আসেন। এই ঘটনায় বাঁকু বেরা নামের আরও এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
তবে ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জীব প্রামাণিক জানান, “সমরেশের পরিবারে সেই একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। বাড়িতে ছেলেমেয়রা ছোট। অন্যদিকে পিন্টুর বিবাহ যোগ্যা মেয়ে ও বৃদ্ধা মা রয়েছেন বাড়িতে। এই ঘটনার আকস্মিকতায় সকলেই হতবাক। গোটা গ্রাম শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই ভবানীপুর থানায় খবর দেওয়া হয়েছে। পুলিশ এসে মৃতদেহগুলিকে উদ্ধার করে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে” বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে এদিন বিকেল নাগাদ বাড়ির বাসন ধোয়ার জন্য পুকুরে গিয়েছিলেন সুতাহাটার কসবেড়িয়ার গৃহবধূ মামনী। তিনি বাসন মেজে বাড়িতে ফেরার সময়ই তাঁর ওপরেই বাজ পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই সঞ্জা হারিয়ে পড়ে যান তিনি। পরে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এছাড়াও সুতাহাটার হোড়খালী গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বেগুনাবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রাধারানী ভৌমিক এদিন তুমুল বৃষ্টির মধ্যে চাষের জমিতে মাছ ধরার ঘুনি বসাতে গিয়েছিলেন। হঠাৎ মাথায় বাজ পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর বলে জানিয়েছেন, সুতাহাটা উন্নয়ন ব্লকের বিডিও আসিফ আনসারী। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।