পাঁশকুড়া : মিড ডে মিলের খাওয়ার জায়গা নোংরা করার অভিযোগে ছাত্রকে শাসন করেছিলেন শিক্ষক। ছেলেকে কেন শাসন করা হবে, সেই প্রশ্নে শিক্ষকের বাড়িতে ধারাল অস্ত্র নিয়ে চড়াও হলেন ছাত্রের বাবা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব পাঁশকুড়ার শ্যামসুন্দরপুর পাটনা উচ্চ বিদ্যালয়ে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পাঁশকুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন ওই শিক্ষক।
সূত্রের খবর, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে শুক্রবার সহকারী শিক্ষক সন্ন্যাসী কাউরি মিড ডে মিল দেখাশোনা করছিলেন। ওই শিক্ষক ছাত্রদের সঙ্গে বসে মিড ডে মিলও খাচ্ছিলেন। ওই সময় বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র উচ্ছিষ্ট খাবার ফেলে মিড ডে মিল খাওয়ার জায়গাটি নোংরা করছিল বলে অভিযোগ। সন্ন্যাসী কাউরি ওই ছাত্রকে নোংরা ফেলতে নিষেধ করেন।
অভিযোগ, শিক্ষকের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দিয়ে ছাত্রটি শিক্ষকের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেয়। সে সময় ওই শিক্ষক একটি লাঠি দিয়ে ছাত্রটির পায়ে প্রহার করেন বলে দাবি। স্কুলের শেষে সন্ধ্যা পর্যন্ত হস্টেলে পড়াচ্ছিলেন ওই শিক্ষক। তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থানা এলাকার খাজুরি গ্রামে। হস্টেলে ছাত্রদের পড়ানোর সময় ওই শিক্ষকের বাড়ির লোকজন তাঁকে ফোন করে জানান, ওই ছাত্রের বাবা কাটারি নিয়ে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়েছেন। শিক্ষককে সামনে না পেয়ে তাঁর স্ত্রী, বৃদ্ধ বাবা-মা ও অসুস্থ দাদাকে গালি দেন।
শিক্ষকের পরিবারের দাবী, ওই শিক্ষককে সামনে পেলে খুন করার হুমকিও দেন ছাত্রের বাবা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শনিবার অভিযুক্ত অভিভাবককে স্কুলে ডেকে পাঠান প্রধান শিক্ষক শেখ গোলাম মোস্তফা। কিন্তু অভিযুক্ত স্কুলে আসেনি। এর পরে এদিন পাঁশকুড়া থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সহকারী শিক্ষক সন্ন্যাসী কাউরি।
ওই শিক্ষক বলেন, “আমি ছাত্রটিকে ছড়ি দিয়ে সামান্য আঘাত করেছিলাম। যাতে ভবিষ্যতে ও এর এরকম না করে। ওই ঘটনার পর ছাত্রটির বাবা আমার বাড়িতে কাটারি নিয়ে চড়াও হয়। আমাকে সামনে পেলে প্রাণে মেরে ফেলত। প্রাণনাশের আশঙ্কা করছি।“ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ গোলাম মোস্তফা বলেন, “ছাত্রটিকে শাসন করেছিলেন সহকারী শিক্ষক। ছাত্রটির বাবা যে আচরণ করেছেন, তা বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।“ পাঁশকুড়া থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।