নিউজবাংলা ডেস্ক : শীঘ্রই দেশজুড়ে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী কিষান (PM Kisan) সম্মান নিধি’র কিস্তি। প্রকল্পের (পিএম কিসান) ১৩তম কিস্তির টাকা বণ্টন করার কথা কেন্দ্রের। কিন্তু কেন্দ্ৰীয় কৃষি মন্ত্রক সূত্রের খবর, এখনও অনেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার নম্বর সঠিক নিয়ম মেনে যুক্ত করা হয়নি। ফলে এ বারও সেই টাকা পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে।
তাদের দাবি, এ রাজ্যে ৬.৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এবার টাকা ঢোকা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। গোটা দেশে এমন চাষির সংখ্যা ১.৪৬ কোটি। বার্ষিক বরাদ্দ ৬০০০ টাকা তিন কিস্তিতে পান তাঁরা। দ্রুত সমস্যার সমাধানে ভারতীয় ডাক বিভাগের অধীন ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস ব্যাঙ্কের (আইপিপিবি) সাহায্যে প্রয়োজনীয় সেই নিয়ম মেনে অ্যাকাউন্ট খুলতে সংশ্লিষ্ট রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।
আইপিপিবি-র ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল (পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামান-নিকোবর) জরুরি ভিত্তিতে তাদের এলাকার ন’হাজারেরও বেশি ডাকঘরে এমন অ্যাকাউন্ট খোলার শিবির চালু করেছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কেন্দ্রের বিভিন্ন সরাসরি আর্থিক সুবিধা প্রকল্পের মতো পিএম কিসান প্রকল্পের ক্ষেত্রেও গ্রাহকের সেভিংস অ্যাকাউন্টে আধার-সিডিং বাধ্যতামূলক। না হলে সেই টাকা মিলবে না।
রাজ্যের কিছু প্রকল্পের ক্ষেত্রে অবশ্য অ্যাকাউন্ট নম্বর ও আইএফএসসি কোড থাকলেও চলে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, এখন কোনও ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলেই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার নম্বর সংযুক্ত (লিঙ্কড্) করা হলেও সেই অ্যাকাউন্টে ভর্তুকির টাকা পেতে হলে গ্রাহককে আলাদা করে সম্মতি দিতে হয়। সেটিই হল আধার সিডিং। তাই অনেকেরই হয়ত অ্যাকাউন্ট আধার-লিঙ্কড হলেও তাতে আধার-সিডিং-এর সুবিধা নেই।
সমস্যাটি উল্লেখ করে কৃষি মন্ত্রকের অন্যতম উপদেষ্টা মনোজ কুমার গুপ্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির নোডাল অফিসারকে সম্প্রতি চিঠি দিয়ে বলেছেন, পিএম কিসান পোর্টালে নথিভুক্ত কৃষকদের শীঘ্রই ১৩তম কিস্তির (২০১৮-১৯ সালের ডিসেম্বর-মার্চ থেকে কিস্তি শুরু) টাকা বণ্টন শুরু হবে। কিন্তু গত ২৪ জানুয়ারির বৈঠকে দেখা যায়, এখনও বহু কৃষকের আধার-সিডিং নেই।
সেই সূত্রেই আইপিপিবি-র সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে এমন চাষির তালিকা আইপিপিবি-র সঙ্গে ভাগ করে নিতে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তাঁদের যুক্তি, গ্রামীণ এলাকায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবার ক্ষেত্রে ডাকঘর ও আইপিপিবি-র ভিত মজবুত ও তারা গোড়া থেকে আধার-সিডিং করেই অ্যাকাউন্ট খোলে। গ্রাহককে আগাম অর্থ অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হয় না।
যে কোনও ধরণের ভর্তুকি পেতে হলে কি করণীয় :
■ কেন্দ্রের সরাসরি ভর্তুকি হস্তান্তর (ডিবিটি) প্রকল্পের সুবিধা পেতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে শুধু আধার নম্বর যুক্ত (লিঙ্কড্) থাকলেই হবে না। সেখানে ভর্তুকি নেওয়ার জন্য সম্মতিও দিতে হবে গ্রাহককে। পরিভাষায় একে বলে ‘আধার সিডিং।‘
■ রাজ্যের সমস্ত ডাকঘরে আগ্রহীদের জরুরি ভিত্তিতে সেই অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য বিশেষ শিবির ডাক বিভাগ ও আইপিপিবি-র।
■ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে আপনার আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ঠিকানার প্রমাণপত্র (যেমন রেশন কার্ড, ইলেকট্রিক বিলের কপি, জীবন বীমা সার্টিফিকেট ইত্যাদি), রঙিন পাশপোর্ট ছবি, মোবাইল নম্বর প্রভৃতি নিয়ে নিকটবর্তী পোষ্ট অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করুন।
■ ইতিমধ্যে ‘আধার সিডিং’ করা অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আইপিপিবি-র (ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্ট ব্যাঙ্ক) সাহায্য নিতে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পরামর্শ কেন্দ্রের।