এগরা, পূর্ব মেদিনীপুর : রবিবার রাতের বেলায় পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ২ ব্লকে বালিঘাইয়ে অবস্থিত বিএলআরও অফিসে লম্বা লাইন দিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। কারণ জানতে গিয়েই দেখা গেল জমির পাট্টা বিলি সংক্রান্ত কাজ চলছে সেখানে। কার জমি, কে পাচ্ছে, যিনি পাট্টা পাচ্ছেন তিনি আদৌ ভূমিহীন কিনা, পাট্টার জমি সংক্রান্ত এমন গুরুত্বপূর্ণ শুনানি ছাড়াই ছুটির রাতে কেন এই তৎপরতা তা নিয়েই শুরু হয়েছে জোরদার বিতর্ক। এই নিয়েই প্রতিবাদে সরব হয়েছে এলাকার তৃণমূল-বিজেপি সব পক্ষই।
রাতেই ঘটনার প্রতিবাদে বিএলআরও অফিসে গিয়ে প্রতিবাদ জানান স্থানীয় বিবেকানন্দ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান এবং বর্তমানে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য রাজনারায়ণ মান্না, বিজেপির জেলা নেতা তন্ময় হাজরা সহ বহু মানুষ। রাতেই ঘটনার একাধিক ভিডিও সহ ট্যুইট করে প্রতিবাদ জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
একাধিক ভিডিও ট্যুইট করেছেন শুভেন্দু। যেখানে দেখা যাচ্ছে রাতের বেলায় বিএলআরও অফিসে দেদার মানুষের ভীড় থিকথিক করছে। পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে লাইন দিয়ে পাট্টায় নিজেদের নাম তালিকাভুক্ত করছেন। কেউ আবার কর্তব্যরত সরকারী আধিকারীকদের এই নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই তাঁদের জবাব, ওপরতলার নির্দেশে কাজ চলছে। এই নিয়ে কাউকে জবাব দেব না।
শুভেন্দুর অধিকারীর অভিযোগ, “ভোটারদের প্রভাবিত করতেই অবৈধ ভাবে রাতের অন্ধকারে জমির পাট্টা দেওয়ার আবেদন নিচ্ছে বিএলআরও অফিস”। শুভেন্দুর দাবী, “কবরস্থান, শ্মশান, বনাঞ্চল, আদিবাসীদের জমি, চা বাগানের জমিকে অবৈধ ভাবে পাট্টা দেওয়া হচ্ছে রাজ্য জুড়ে।
পটাশপুরের ঘটনা তারই প্রমাণ”। শুভেন্দু প্রশ্ন তোলেন “এভাবে রাতের অন্ধকারে একজনের হাতে থাকা জমি কেড়ে নিয়ে অন্য জনের হাতে দেওয়া হচ্ছে কেন। কিসের এত গোপনীয়তা” সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। শুধু ভোটে জেতার লক্ষ্যেই এমনটা করছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার।
On Sunday evening BL&LRO Offices across WB have been unlocked. The purpose is to work in a covert manner & hastily execute State Govt’s order to prepare documents quickly so that long term leaseholds (Patta) of land could be distributed, to lure voters before Panchayat Elections. pic.twitter.com/MO1N9khmDa
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) November 20, 2022
যদিও এগরা ২ ব্লকের বিডিও কৌশিক রায় জানান, “বহু মানুষের পাট্টা বিলির বিষয় রয়েছে। তাই ছুটির মধ্যেও দিনরাত এক করে কাজ চালাতে হচ্ছে”। তাঁর দাবী, “মুখ্যমন্ত্রীর সভায় এগরা ২ ব্লকের ২৫০ জনকে পাট্টা দেওয়া হবে। তাঁদের বাসে তোলার আগে কিভাবে নিয়ে যাওয়া হবে, কোথায় কোথায় বাস থাকবে এই সব নিয়েই প্রস্তুতি আলোচনা করতেই এঁদের নিয়ে আসা হয়েছিল”।
বিডিও’র দাবী, “এত বিপুল মানুষকে পাট্টা দেওয়া মুখের কথা নয়। মানুষের কাজের জন্য রাতভর সরকারী দফতর খুলে রেখে কাজ করা হচ্ছে”। তাঁর আরও দাবী, “রাতে অফিস খুলে কাজের জন্য কোনও লিখিত অর্ডারের দরকার নেই। এই নিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরী হচ্ছে”।