নিউজবাংলা ডেস্ক : ২০১৬ সালে রাজ্যে নিযুক্ত শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, গ্রুপ ডি’র মধ্যে ৫২৫০ জন অযোগ্য বলে কোর্টে হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাকীদয়ের যোগ্য উল্লেখ করে কোনও সংশাপত্র দিতে অপারগ বলে জানিয়ে দিল এসএসসি (WB SSC Recruitment)। আদালতের রায়ে সদ্য চাকরি যাওয়া ২৫৭৫৩ জনের মধ্যে কারা যোগ্য আর কারা অযোগ্য, সম্পূর্ণ তালিকার জন্য তা স্পষ্ট করে বলা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলে এসএসসি ফের কবুল করল।
আনন্দবাজার অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানিয়েছেন ‘‘সবাইকে যোগ্য বলে শংসাপত্র দেব কী ভাবে? নানা ধরনের কারচুপি থাকতে পারে। কারও অ্যাকাডেমিক নম্বর বাড়ানো থাকতে পারে, ইন্টারভিউ নম্বর বাড়ানো হয়ে থাকতে পারে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর মাধ্যমিকের নম্বর থেকে শুরু করে সব কিছু খুঁটিয়ে দেখা সম্ভব নয়। এর পরে যদি ওই তালিকা থেকে আরও ৩০ জনের বেআইনি নিয়োগ বেরোয়, তখন কী হবে? তাই ‘সবাই যোগ্য কি না নিশ্চিত নই’ এই কথাটা বলেছি।
এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘‘সবাইকে যোগ্য বলে শংসাপত্র দেব কী ভাবে? নানা ধরনের কারচুপি থাকতে পারে। কারও অ্যাকাডেমিক নম্বর বাড়ানো থাকতে পারে, ইন্টারভিউ নম্বর বাড়ানো হয়ে থাকতে পারে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর মাধ্যমিকের নম্বর থেকে শুরু করে সব কিছু খুঁটিয়ে দেখা সম্ভব নয়। এর পরে যদি ওই তালিকা থেকে আরও ৩০ জনের বেআইনি নিয়োগ বেরোয়, তখন কী হবে? তাই ‘সবাই যোগ্য কি না নিশ্চিত নই’ এই কথাটা বলেছি।’’
কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হওয়ার পরে অভিযোগ ওঠে, বার বার চাওয়া সত্ত্বেও কোর্টে যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা জমা দেয়নি এসএসসি। এই প্রসঙ্গে সিদ্ধার্থ জানান, ২০১৬ সালে নিযুক্তদের মধ্যে ৫২৫০ জন অযোগ্য বলে কোর্টে হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছিল। চাকরিহারা শিক্ষকদের প্রশ্ন, বাকিরা যোগ্য কি না সেই শংসাপত্র কেন তাঁরা দিতে পারছেন না? সেই প্রেক্ষিতে সিদ্ধার্থের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও শিক্ষকেরা চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন। এসএসসি দফতর অভিযানের পরিকল্পনা করছেন তাঁরা।
এদিকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আগামী সোমবার এসএসসি মামলার শুনানি হতে পারে বলে বর্তমান পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পুরো প্যানেল বাতিল করে দেওয়ায় এক লপ্তে প্রায় ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর চাকরি চলে যেতে বসেছে। তাই তা রুখতেই, বিশেষত, যারা সঠিক যোগ্যতায় পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, যাদের নিয়োগের বিষয়ে কোনও অভিযোগ নেই, তাদের চাকরি অক্ষত রাখতেই রাজ্য সরকার এবং দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করেছে। সোমবার তারই শুনানি হতে পারে বলেই সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রি সূত্রে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, এই মামলায় যুক্ত হয়ে যোগ্য অথচ চাকরি হারাতে বসা শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীদের একাংশও সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছে চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষকদের ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল। অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তবে সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা করেছেন, সেটি কবে উঠবে, তা এখনও জানতে পারেননি তাঁরা।
উল্লেখ্য, হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য আগেই মামলা দায়ের করেছে শীর্ষ আদালতে। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে সেই মামলার দ্রুত শুনানির জন্য আবেদনও জানিয়েছে রাজ্য। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে সম্ভাব্য শুনানির দিন আগামী শুক্রবার দেখাচ্ছে। সোমবার যে যে মামলার শুনানি হবে, তার অতিরিক্ত তালিকা আজ, শনিবার বেরোবে। ফলে সেই তালিকা থেকে জানা যাবে যে, সোমবার এসএসসি মামলার শুনানি হবে পারে কি না।
এ দিন দিল্লিতে কিছু শিক্ষক জানান, তাঁদের ভোটের ডিউটি পড়েছে। দিল্লি আসায় তার প্রশিক্ষণ নেবেন কী ভাবে, সেই বিষয়ে তাঁরা চিন্তিত। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, “আমাদের তিন প্রতিনিধি চাকরিহারা শিক্ষকদের সঙ্গে দিল্লি গিয়েছেন। আলাদা মামলা করা হবে।” দিল্লি থেকে চাকরি হারানো শিক্ষক মেহবুব মণ্ডল জানান, “আমরা দ্রুত মামলা দায়ের করব। চাকরিহারানো শিক্ষকেরা পরীক্ষা সংক্রান্ত নথি আমাদের প্রতিনিধির কাছে জমা দিয়েছেন।”