নিউজবাংলা ডেস্ক : আগের বিয়ে এবং সন্তান থাকার খবর লুকিয়ে ফের বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল মৌমিতা পাত্র(২৩)। মন্দিরে বিয়ে করে নতুন শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন। আগের বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হতেই লোকলজ্জার ভয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নিলেন ২০দিন আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ দম্পতি৷
মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন-২ ব্লকের পোরলদা গ্রামে অনিমেষ দে(২৮) মৌমিতা পাত্রর(২৩) ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। লোকলজ্জার ভয়ে যুগলে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিস ও পরিবারের লোকজন। কারণ শুক্রবার মৌমিতার আগের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের এই বাড়িতে আসার কথা ছিল। তার আগেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন নবদম্পতি।
মঙ্গলবার নতুন শ্বশুরবাড়ির নির্মীয়মাণ একটি ঘরে একই দড়িতে স্বামী, স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় হতবাক বাড়ির লোকজন। খবর ছড়িয়ে পড়তে চাঞ্চল্য ছড়ায় গ্রামে। পুলিস জানিয়েছে, এদিন সকালে নবনির্মিত বাড়িতে তাঁদের দু’জনকে একই দড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলতে দেখা যায়। তাঁদের উদ্ধার করে খণ্ডরুই গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিস মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। সেই সঙ্গে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আগে এই ব্লকেরই আগরবাড় গ্রামের যুবক দীপু বাগের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মৌমিতার। তাঁদের চার বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। গত ২২এপ্রিল তিনি স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে না পেয়ে থানায় অভিযোগ জানান। তার চারদিন পর ২৬ এপ্রিল অনিমেষকে বিয়ে করে নতুন সংসার পাতেন। মৌমিতার বাপের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার আলংগিরিতে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অনিমেষ ট্রাক্টর চালাতেন। কিছুদিন আগে ট্রাক্টর নিয়ে মৌমিতাদের গ্রামে তিনি কাজে গিয়েছিলেন। কয়েকদিন সেখানে কাজে যাওয়ার সুবাদে মৌমিতার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তা থেকেই দু’জনের প্রেম। মৌমিতার স্বামী কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। তাই এসব দিকে খুব একটা নজর ছিল না।
এরই মাঝে নতুন করে সংসার পাতার নেশায় মৌমিতা ঘর, স্বামী, সন্তান ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। তারপর মন্দিরে গিয়ে অনিমেষকে বিয়ে করেন। দীপুর বাড়ির লোক মোহনপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার পর জানতে পারেন, বাড়ির বউ অন্য এক যুবককে বিয়ে করে সংসার পেতেছেন। তারপরই তাঁরা সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
অনিমেষের কাকা অনন্ত দে বলেন, ওরা মন্দিরে বিয়ে করে বাড়িতে এসেছিল। প্রেমের বিয়ে নিয়ে প্রথম দিকে একটু আপত্তি ছিল। কিন্তু পরে আমরা মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও জানতাম না মৌমিতার আগে বিয়ে হয়েছিল বা সন্তান আছে। ভাইপো জানত কি না, সেটা বলতে পারছি না। দিন তিনেক আগে বিষয়টা জানাজানি হয়। আমরা তখন মৌমিতার বাড়ির লোকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। ওঁদের শুক্রবার আমাদের এখানে আসার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই তো সব শেষ হয়ে গেল। মনে হয় বিষয়টি জানাজনি হয়ে যাওয়ায় লোকলজ্জার ভয়েই ওরা এই পথ বেছে নিল।
মোবাইলে নিউজ আপডেটপেতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিন, ক্লিক করুন Whatsapp