নিউজবাংলা ডেস্ক : মন্দ কাজের সাজা ভালো কাজ। র্যাগিংয়ের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত পড়ুয়াদের অভিনব সাজা কলকাতা হাইকোর্টের। র্যাগিং, জন্য মারপিট ও ভাঙচুরের ঘটনার যুক্ত থাকায় ছয় পড়ুয়াকে বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ। একজন ছাড়া তাঁদের সকলেই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া। তাঁদের দু’জনকে আগেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১২ সপ্তাহ পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য।
এবার বিচারপতি কৃষ্ণা রাও আরও তিন জনকে একই নির্দেশ দিলেন। বাকি একজন আইন ও বিচার বিভাগের ছাত্র। তাই তাঁকে হাইকোর্টের লিগাল এইড সার্ভিসে টানা ১২ সপ্তাহ দিনে চার ঘণ্টা করে কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়ে ওই পড়ুয়ারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁরা বলেন, আগামী ৩ জুন থেকে প্র্যাকটিক্যাল ও ১৫ জুন থেকে লিখিত পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। ওই পরীক্ষায় তাঁদের বসার সুযোগ দেওয়া হোক।
প্রসঙ্গতঃ উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দুই দল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে গিয়েছিল। চলে ব্যাপক ভাঙচুরও। আহতদের চিকিৎসা করাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছাড়াও সিসিটিভি ফুটেজ ও অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির অনুসন্ধানের ভিত্তিতেই এই ঘটনায় যুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মামলাকারীরা তাঁদের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
বিচারপতি রাও অভিমত প্রকাশ করে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তে ভুল নেই। কোনও শিক্ষার্থীর এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। র্যাগিং সব দিক থেকেই অনৈতিক। এর ফলে শিক্ষার্থীদেরই আত্মমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। যাঁরাই এমন ঘটনায় যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সুশিক্ষার অভাব রয়েছে। তাই চিকিৎসা খাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে খরচ হয়েছে তা মামলাকারীদের বহন করতে হবে। অংশ নিতে হবে সামাজিক পরিষেবায়।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তিন পড়ুয়াকে সদাইপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুভাষনগর এফ পি স্কুল ও কোকাপুর স্কুলে সপ্তাহে দুই দিন চার ঘণ্টা করে পড়াতে হবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে ১২ সপ্তাহ এই কাজ করতে হবে তাঁদের। কেমন পড়ানো হল, তা ওই পড়ুয়াদের বিশ্ববিদ্যালয়কে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা তাঁদের শংসাপত্র দেবেন। চতুর্থ পড়ুয়াকে পরীক্ষা শেষে হাইকোর্ট লিগাল এইড সার্ভিসের সচিবের সঙ্গে দেখা করে টানা ১২ সপ্তাহ প্রতি দিন চার ঘন্টা কাজ করতে হবে। তাঁর কাজের রিপোর্টও তাঁকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা করতে হবে।
সেইসঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়েছে, এই পড়ুয়ারা শুধু পরীক্ষা দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবেন। স্টাডি মেটেরিয়াল ও অন্যান্য নথি আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে তাঁদের অভিভাবকদের।
মোবাইলে নিউজ আপডেটপেতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিন, ক্লিক করুন Whatsapp