নিউজবাংলা ডেস্ক : প্রায় ৪ মাস আগে নিজেরই বাবা, মা, বোন ও ঠাকুমাকে নৃশংস ভাবে খুন করে বাড়ির নীচের গোপন সুড়ঙ্গে পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। হাড় হিম করা ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের কালিয়াচকের পুরনো ১৬ মাইল এলাকায়। গত ফেব্রুয়ারীতে শেষবার এই পরিবারের সদস্যদের শেষবার দেখা গিয়েছিল বলে স্থানীয়দের দাবী।
এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য মহম্মদ আসিফের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে কালিয়াচক থানার পুলিশ অভিযুক্তকে পাকড়াও করেছে। এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শনিবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বাড়ির নীচের গোপন সুড়ঙ্গে রাখা ৪টে কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান এই ৪ জনকে ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে পরে তাঁদের জলে ডুবিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।
মৃতরা হল আসিফের মা ইরা বিবি, বাবা জাওয়াদ আলি, বোন আরিফা খাতুন এবং ঠাকুমা আলেকজান খাতুন। তাঁদের দেহগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ঠিক কোন কারনে এমন নৃশংস ঘটনা তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কালিয়াচক থানা সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন ধরেই আসিফের বাড়িটিকে ব্যাপক সুরক্ষায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। চারিদিকে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে প্রতিবেশীদের মনে।
ইতিমধ্যে আসিফের দাদা আরিফ পুলিশকে জানিইয়েছে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী পরিবারের ৪ সদস্যকে খুন করে ছোট ভাই আসিফ। তাঁকেও খুন করার ছক কষেছিল বলে আরিফ জানিয়েছে। তবে কোনওক্রমে নিজের প্রাণ বাঁচিয়ে কলকাতায় পালিয়ে যায় আরিফ। যদিও পুলিশ ইতিমধ্যে দুই ভাইকেই আটক করেছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, একই পরিবারের ৪ সদস্য যদি ফেব্রুয়ারী থেকে গায়েব হয়ে গিয়ে থাকেন তাহলে প্রতিবেশীদের কারও নজরে কেন ঘটনাটি এল না। আরিফ জানিয়েছে তাঁর ভাই এই খুন করেছে, তাহলে এতদিন সেও চুপ করে বসে ছিল কেন। তাছাড়া বাড়ির নীচে সুড়ঙ্গ বানিয়ে যেভাবে ৪টে মৃতদেহ রাখা হয়েছিল তা কোনও একজনের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই যুবক অনলাইন অ্যাপ বানাচ্ছিল জানিয়ে কাউকেই বাড়িতে ঢুকতে দিত না। তাঁর বাড়িটিকে দুর্বোধ্য দুর্গ বানিয়ে ফেলেছিল আসিফ। কথায় কথায় এক প্রতিবেশীর কাছে ৪ সদস্যকে খুনের ঘটনা বলে ফেলেছিল আসিফ এমনটাই খবর পুলিস সূত্রে।
পুলিশ আধিকারীক জানিয়েছেন, গোডাউন ঘরের ভেতর মাটির নীচের বেশ কয়েক ফুট গর্ত করে ৪টে দেহ পুঁতে রাখা হয়েছিল। সব থেকে আশ্চর্যের অভিযুক্তের দাদা ঘটনা জানার পরেও এতদিন ধরে চুপ ছিল কেন তা পরিষ্কার নয়। দেহগুলি ময়না তদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
মোবাইলে আরও নিউজ আপডেট পেতে এইখানে ক্লিক করুন – Whatsapp