হলদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর : প্রেমিক যুবক ইতিমধ্যে দু’বার বিয়ে করেছে। এবার তৃতীয় পক্ষ হওয়ার জন্য প্রণয়ী গৃহবধূকে চাপ দিয়েছিল যুবক। আর সেই প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়াতেই প্রণয়ীর গলা কেটে খুন করে চরম শাস্তি দিয়েছে প্রেমিক। গত ২০ এপ্রিল বুধবার রাত্রি সাড়ে ৮টা নাগাদ হলদিয়ার ভবানীপুর থানার বাঁশখানা জালপাই এলাকায় গৃহবধূর গলাকাটা দেহ উদ্ধার হওয়ার মাত্র ৭ দিনেই সেই হত্যা রহস্যের কিনারা করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ।
সেদিন খুন হয়ে যাওয়া মহিলার নাম টুম্পা ঘোষ (৩৩)। তিনি ভগবানপুর থানার কোটলাউড়ির বাসিনা। বুধবার থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। এই ঘটনার মূলচক্রী পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানার খরিকার বাসিন্দা সঞ্জয় মান্নাকে (৩৬) ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার ধৃতকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার ভবানীপুর থানায় সাংবাদিক সম্মেলনে এসে হলদিয়ার এসডিপিও রাহুল পান্ডে জানান, “ধৃতকে জেরা করে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, গোটা ঘটনার পেছনে রয়েছে এক অবৈধ সম্পর্কের গল্প। একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে ভগবানপুরের টুম্পা’র সঙ্গে প্রায় আড়াই বছর আগে যোগাযোগ ঘটেছিল সবংয়ের সঞ্জয়ের। তবে পরবর্তীকালে এই অবৈধ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন টুম্পা। বারেবারে টুম্পাকে বোঝানোর পরেও রাজি হচ্ছিল না সে।
রাহুল পান্ডে জানান, “টুম্পা জেনে গিয়েছিল, ইতিমধ্যে দুটি বিয়ে করেছে সঞ্জয়। বছর ৭ আগে বিয়ে করা তাঁর প্রথম পক্ষ্যের স্ত্রী সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে পারিবারিক হিংসার মামলা রুজু করে। সেই মামলা এখনও চলছে। প্রথম পক্ষ্যের দুই ছেলে রয়েছে সঞ্জয়ের। এরপর বছর খানেক আগে পুনরায় একটি মেয়েকে বিয়ে করে সে। এবার তৃতীয় বার বিয়ে করার জন্য টুম্পার ওপর চাপ দিতে থাকে সঞ্জয়। ঘটনার দিনও ঠিক এই কারনেই টুম্পাকে নিয়ে বেরিয়েছিল সঞ্জয়”।
এসডিপিও আরও জানান, “ঘটনার দিন সঞ্জয় টুম্পাকে নিয়ে বাজকুলে তাঁর এক তুতো বোনের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিল। কিন্তু সেই বোন জানায় হলদিয়ায় একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে এসেছে সে। সেই কারনেই হলদিয়ায় সঞ্জয়ের বাইকে চড়ে টুম্পা চলে আসে। কিন্তু পথে দু’জনের বিতন্ডা হওয়ায় আগে থেকে সঙ্গে রাখা ধারালো ছুরি দিয়ে টুম্পার ওপর এলোপাথাড়ি কোপ মারে সঞ্জয়”। রাহুল পান্ডে জানান, “ইতিমধ্যে নিজের দোষ স্বীকার করেছে সঞ্জয়। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে” বলে জানিয়েছেন তিনি।