নিউজবাংলা ডেস্ক : মাসিক কাজের যথাযথ পারিশ্রমিক না দিলে এবার নির্বাচনের কাজ অংশগ্রহণ করবেন না ঘাটাল মহকুমার গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লকের চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা। দীর্ঘদিন পারিশ্রমিক না বাড়িয়ে শুধু দায়িত্বের (Loksabha Election 2024) বোঝা বাড়িয়ে যাওয়ার কারণে চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। সেজন্যই তাঁদের এই সিদ্ধান্ত। ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, ওঁরা নির্বাচনে কাজ করবেন না বলে আমার কাছে কোনও দাবি বা অভিযোগ করেননি। তবে ঘাটাল ব্লকের বিডিও অভীক বিশ্বাস জানিয়েছেন, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের একটি দাবি তাঁর কাছে জমা পড়েছে। তবে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার তাঁর নেই। বিডিও বলেন, তাই বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।
গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ব্লকস্তরে গ্রাম রোজগার সহায়ক, গ্রাম পর্যায়ের উদ্যোক্তা, স্কিল্ড টেকনিক্যাল পার্সন, টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট, প্রোগ্রাম অ্যাসিস্ট্যান্ট, জুনিয়ার প্রোগ্রাম অফিসার, কম্পিউটার অ্যাসিস্ট্যান্ট এই সমস্ত পদগুলি বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য তৈরি করা হয়েছিল এবং পদগুলিতে চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। ওই সমস্ত পদে চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত কর্মীদের অভিযোগ, সরকারের অন্যান্য দপ্তরের চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা কর্মীদের মাসিক পারিশ্রমিক অনেকগুণ বৃদ্ধি হলেও তাঁদের বেতন বাড়েনি। অথচ তাঁদের সারা বছর সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কাজের পাশাপাশি অন্যান্য কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তার বাইরেও প্রত্যেকবার নির্বাচনের সময় তাঁদের বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়। অস্থায়ী বা চুক্তির ভিত্তিতে যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে তাঁদের নির্বাচনের কাজে লাগানো যাবে না বলে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ রয়েছে। সেই নির্দেশও মানছে না প্রশাসন। নানারকম চাপ দিয়ে তাঁদের কাজ করানো হচ্ছে। ঘাটাল ব্লক এলাকার চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত কর্মী অভিষেক সাঁতরা, সন্দীপ রানা, নীলাদ্রী সাঁতরা, সন্দীপ রানা, নীলাদ্রী কর্মকার, শুভাশিস বাঙাল প্রমুখ কর্মকার, শুভাশিস বাঙাল প্রমুখ বলেন, আমরা যেহেতু একটি নির্দিষ্ট স্কিমের জন্য নিযুক্ত, তাই আমার সেই স্কিমের কাজই করতে চাই। আমাদের উপর নতুন করে কোনও দায়িত্ব চাপানো যাবে না।
যদি চাপাতেই হয় তাহলে আমাদের কাজের প্রকৃত মর্যাদা দিতে হবে। কারণ, ৯ থেকে ১৬ হাজার টাকা পারিশ্রমিকে বর্তমান যুগে সংসার চালানো সম্ভব নয়৷ অবিলম্বে মাসিক পারিশ্রমিক না বাড়ালে তাঁরা নির্বাচনের কোনও কাজে অংশ নেবেন না বলে প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছেন। ওই ইস্যুতে গোটা মহকুমার পাঁচটি ব্লক এবং ৪৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ হওয়া ক্ষুব্ধ কর্মীরা একজোট হচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে।
চন্দ্রকোণা বিধানসভা এলাকার এক গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রাম পর্যায়ের উদ্যোক্তা বলেন, স্কিমের কাজের বাইরে সারা বছর যখন তখন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যা নির্দেশ আসে তা সঙ্গে সঙ্গে করে দিতে হয়। বর্তমানে আমাদের রাত ১২টা পর্যন্ত মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে নির্বাচনের কাজের ডিউটি দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পারিশ্রমিক তো দুরের কথা, যাতায়াতের ভাতাও দেওয়া হচ্ছে না। রাতে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারি অমানবিক চাপের প্রতিকার করতে চাই।
সংবাদ সূত্র – বর্তমান পত্রিকা