তমলুক : সমবায় নির্বাচনে এবার খুল্লামখুল্লা জোট বেঁধে লড়াইয়ে নামছে রাম ও বাম। আগামী ৪ ডিসেম্বর শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুইগঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন কমিটির নির্বাচন রয়েছে। তারজন্য আজ, সোমবার মনোনয়নপত্র তোলার দিন। সিপিএম ও বিজেপি প্রার্থীরা একযোগে মনোনয়নপত্র তুলবেন ও জমা দেবেন।
তৃণমূলকে হারাতে ‘খারুই-গঠরা সমবায় বাঁচাও মঞ্চে’র নামে সরাসরি জোট বেঁধেছে সিপিএম এবং বিজেপি। ৪২টি আসনের মধ্যে সিপিএম ১৮ ও বিজেপি ২৫টি আসনে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জোটের পক্ষ থেকেই দুই দলের মুখও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।
বিজেপির পক্ষ থেকে দলের কিষাণ মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদক বামদেব গুছাইত ও সিপিএমের পক্ষে জোটে মুখ হয়েছেন খারুই-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান দীনেশ মণ্ডল। সমবায় ভোটে এর আগেও জোট বেঁধে লড়াই করেছে বিজেপিসিপিএম। নন্দকুমার ব্লকের বহরমপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে এই ফর্মুলায় তৃণমূলকে পরাজিত করেছে জোট।
তবে, এবার তাঁরা সরাসরি জোটের কথা স্বীকার করেছেন। সব শুনে তৃণমূলের মন্তব্য, ওদের ‘গোপন বোঝাপড়া’ আর কতদিন গোপন থাকবে? এর আগে পাঁশকুড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের একাধিক ওরা জোট জায়গায় একইভাবে করেছিল। তাতেও তৃণমূলকে হারাতে পারেনি। খারুই-গঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন সমিতির ভোটেও ওই জোট ধরাশায়ী হবে।
সমিতিতে ভোটার সংখ্যা ২৩০০। খারুই-গঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন ডিসেম্বরের নির্বাচনে ৪৩ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। তারপর ওই প্রতিনিধিরা ১৮ জন ডিরেক্টর নির্বাচন করবেন। সেই ডিরেক্টররা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন করবেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও বোর্ড পরিচালনায় অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। এই অভিযোগকে সামনে রেখে তারা সমবায় বাঁচাও মঞ্চ গড়েছে।
বিজেপি নেতা বামদেব গুছাইত বলেন, শাসক দল লাগামহীন সন্ত্রাস চালাচ্ছে। ইউনিভার্সাল ভোটারের নামে এই সমবায়ে ৫০০ ভুয়ো ভোটারের নাম ঢোকানো হয়েছে। বোর্ড পরিচালনায় দুর্নীতিও সীমাহীন। পাঁচ বছরের বোর্ডের মেয়াদের পর আরও তিন বছর প্রশাসক নিয়োগ করে চূড়ান্ত অনিয়ম হয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে আমরা একযোগে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাম ও বিজেপি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই সমবায়ে লড়াই করছে।
সিপিএম নেতা দীনেশ মণ্ডল বলেন, আমরা বিভিন্ন জায়গায় সমবায় বাঁচাও মঞ্চ তৈরি করেছি। সেখানে যে কোনও সমবায়ীরা স্বাগত। সরাসরি বিজেপির সঙ্গে জোট করেছি, এমনটা নয়। আমাদের জোটে অনেকে শামিল হয়েছেন।
তৃণমূল নেতা তথা শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজেশ হাজরা বলেন, বিজেপি ও সিপিএম এর আগেও বিভিন্ন জায়গায় জোট করেছে। ওদের জোটে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই। ৪ ডিসেম্বর ওই সমবায় সমিতির নির্বাচন। সেদিন খারুই-গঠরা সমবায়ে ওই জোট ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাবে।