লোকসানে চলা বিমান সংস্থাটিকে কোনও বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে মনে করছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। এদিন পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটকে পরাজিত করেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে৷ তাঁর পদত্যাগের দাবিতে অনাস্থা এনেছিল বিরোধীরা৷ রাজাপাকসের পক্ষে ১১৯টি এবং বিপক্ষে মাত্র ৬৮ জন এমপি ভোট দেন। এই জয়ের ফলে প্রেসিডেন্ট পদে বহাল থাকবেন তিনি।
সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বিক্রমাসিঙ্ঘে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দেশবাসীকে মিথ্যা বলার ইচ্ছা আমার নেই। দেশে মজুত জ্বালানি প্রায় শেষ৷ যেটুকু রয়েছে, তাতে বড়জোর মঙ্গলবার পর্যন্ত চলতে পারে৷ ফলে সঙ্কট আরও তীব্র হবে। তার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আগামী কয়েকটি মাস আমাদের কঠোর আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে কাটাতে হবে।’ আর্থিক স্থিতিশীলতা আনতে প্রশাসনকে একগুচ্ছ নির্দেশও ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ১২৪ মিলিয়ন ডলার লোকসান হয়েছে শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের। আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে এই ধাক্কা সামাল দিতে না পেরেই বিমান সংস্থাকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিক্রমাসিঘের সরকার। অন্যদিকে, সরকারি কর্মীদের মাইনে দিতে না পেরে নতুন করে নোট ছাপানোর পথেও হাঁটছে দ্বীপরাষ্ট্র। তবে সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে শ্রীলঙ্কার টাকার দাম আরও পড়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে জ্বালানি তেলের জন্য হাহাকার পড়ে গিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রে। যেটুকু মজুত ছিল তা মঙ্গলবারই শেষ হয়ে গিয়েছে। এই আবহে ক্রেডিট লাইনের অধীনে দ্বীপরাষ্ট্রে জ্বালানি পাঠাচ্ছে ভারত। মঙ্গলবারও রাজধানী কলম্বোর পেট্রল পাম্পগুলিতে ভিড় করেছেন গাড়ি চালকরা। প্রায় ছয়-সাত ঘণ্টা লাইন দিয়েও পেট্রল কিনতে পারেননি তাঁরা। জ্বালানি তেলের জোগান না থাকায় বন্ধ হওয়ার মুখে গণ পরিবহণ ব্যবস্থা।
বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কল কারখানাও। ধাক্কা খাবে কৃষি পণ্যের উৎপাদন। এর ফলে খাদ্য সামগ্রীর অভাবে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে দ্বীপরাষ্ট্রে। দেশের আর্থিক সঙ্কট প্রসঙ্গে প্রাক্তন শক্তিমন্ত্রী উদয়া গাম্মানপিলা বলেন, ‘পরিস্থিতি খুবই ভয়ানক। রক্তহীন মানুষের মতো অবস্থা।’ খাদ্যের অভাবে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পার্লামেন্টের সদস্য ইয়াপা আবেবর্ডনা।