Sunday, September 8, 2024
Homeবিদেশপ্রেমের টানে কুমির ভর্তি নদী সাঁতরে বাংলাদেশ থেকে নরেন্দ্রপুরে গৃহবধূ, শেষে ঠাই...

প্রেমের টানে কুমির ভর্তি নদী সাঁতরে বাংলাদেশ থেকে নরেন্দ্রপুরে গৃহবধূ, শেষে ঠাই শ্রীঘরে !

spot_img
spot_imgspot_img
- Advertisement -

নিউজবাংলা ডেস্ক : এই কাহিনি আধুনিক একটা লায়লা-মজনুর গল্পের জন্ম দিতে পারত, যদি ছেলেটি মেয়েটিকে ছেড়ে পালিয়ে না গিয়ে এ কালের দেবদাস হয়েও পাশে থেকে যেত। কুমিরের ভয় তুচ্ছ করে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা থেকে কালিন্দীর দুস্তর পারাবার সাঁতরে হিঙ্গলগঞ্জ এসেছে মেয়েটি। পাড়ি দিয়েছে মোট ১১০ কিলোমিটার সড়কপথ। তার আগে সীমান্ত পার হওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় ১৮ দিন উদভ্রান্তের মতো ঘুরেছে অচেনা রাস্তায়।

সবশেষে সে দেখা পেল ছেলেটির। শেষে ঘরও বাঁধল তাঁরা। তবে এ প্রেম কাহিনির শেষটা বিয়োগাত্মক। অনুপ্রবেশের অভিযোগে মেয়েটিকে গ্রেপ্তার করার পর ছেলেটি পালাল। মেয়েটি এখন আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে, জেল হেফাজতে। বছর বাইশের মেয়েটির বিরুদ্ধে ১৪ ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা দায়ের হল।

সীমান্তবর্তী থানার পোড় খাওয়া এক পুলিস আধিকারিক বলছেন, ‘গোটা চাকরি জীবনে ঘর পালানোর বহু ঘটনা দেখেছি। কিন্তু প্রেমের টানে ষাট ফুট চওড়া উত্তাল নদী সাঁতরে আসার মতো কোনও ঘটনা চোখে পড়েনি। কুমিরে ছিঁড়ে খেতে পারত মেয়েটিকে। ভুপেন হাজারিকার গানে শুনেছি ভালবাসা পোড়ায় মন, কিন্তু অঙ্গ পোড়েনা।

এই মেয়েটির কিন্তু অঙ্গহানির বিলক্ষণ সম্ভাবনা ছিল। কুমির ভর্তি নদীতে নামা ওর উচিত হয়নি। এই লায়লা-মজনুর লায়লার আসল নাম কৃষ্ণা মণ্ডল (২২)। মজনুর নাম অভীক মণ্ডল (২৬)। মেয়েটির স্বামীর নাম পরিমল মণ্ডল৷ শ্বশুরবাড়ি বাংলাদেশের শ্যামনগরে। অভীকের বাড়ি নরেন্দ্রপুরের রানিয়ায়।

কৃষ্ণা গত ৬ এপ্রিল বাড়ি থেকে পালিয়ে সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ সীমান্তে আসে। তখন দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জোর টহলদারি চলছিল। তাই সেখানে ১৮ দিন অপেক্ষা করে। তারপর সুযোগ বুঝে কালিন্দী নদী সাঁতরে হিঙ্গলগঞ্জ পৌঁছয়। সেখান থেকে কৈখালি আসে। এক ব্যক্তির কাছ থেকে ফোন চেয়ে অভীককে ফোন করে। এরপর অভীকের এক বন্ধু একটি গাড়ি নিয়ে কৈখালি যায়। তারপরে সেখান থেকে নরেন্দ্রপুর।

পুলিসের বক্তব্য, রবিবার কৃষ্ণাকে অভীকের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভীক ও তাঁর পরিবারের কারও খোঁজ নেই। কৃষ্ণাদেবীর স্বামী বাংলাদেশের শ্যামনগরের বাসিন্দা পরিমল মণ্ডল ২১ মে নরেন্দ্রপুর থানায় স্ত্রী কৃষ্ণার নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়। তারপর রানিয়াতে কৃষ্ণাদেবীর খোঁজ মিলেছে।

অভীকের কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, নদী পেরিয়ে আসার কথা লোকমুখে প্রচার হয়ে যায়। প্রতিবেশীদেরই একাংশের বক্তব্য, কালীঘাটে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন কৃষ্ণা-অভীক। তারপর তাঁরা নতুন সংসার শুরু করেছিলেন। এই একই কথা পুলিসকে জানিয়েছিলেন পরিমল। তাঁর বক্তব্য ছিল, ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি কৃষ্ণার দ্বিতীয় বিবাহের কথা জানতে পারেন। তবে কৃষ্ণাদেবী কেন শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসেন, এই প্রশ্নের উত্তর পরিমল স্পষ্ট করে জানাননি।

- Advertisement -

নিয়মিত খবরে থাকতে আমাদের সোশ্যাল সাইটে যুক্ত হয়ে যান

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments