নিউজবাংলা ডেস্ক : ২০২১-এ রাজ্যে নতুন করে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক ক্রমশঃ সাপে নেউলে হয়ে উঠেছিল। রাস্তার রাজনীতি চলে এসেছিল প্রশাসনের অন্দরেও। বিধানসভার অধিবেশনই হোক বা সরকারী কোনও অনুষ্ঠান সব ক্ষেত্রেই সরকার ও বিরোধীপক্ষের মধ্যে স্পষ্ট হয়েছে বিরোধের আবহ। তবে আজ আচমকাই বদলে গেল পরিস্থিতি।
আজ বিধানসভার অধিবেশনের প্রথম অধ্যায়ের সমাপ্তির পরে আচমকাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) চা চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়ে বসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari)। শুভেন্দুও সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করে বিধানসভার কেবিনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগ দেন। মিনিট খানেক বাদে বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। তবে দ্বিতীয় অধ্যায়ের বেল বেজে যাওয়ায় সৌজন্য সাক্ষাৎকার পর্ব শেষ করে মুখ্যমন্ত্রী সহ শুভেন্দু ও অন্যান্য বিধায়করা অধিবেশন কক্ষে চলে যান। কারণ দ্বিতীয়ার্ধে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য দিয়েই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, শুভেন্দুকে চা খেতে ডেকেছিলাম। অন্যদিকে বৈঠক সেরে বেরিয়ে আসার সময় শুভেন্দুর মন্তব্য, এটা সৌজন্য সাক্ষাৎকার ছিল। তবে দুই যুযুধান নেতৃবৃন্দের এই সৌজন্য সাক্ষাৎকারকে অত্যন্ত পজিটিভ পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। দীর্ঘদিন বাদে রাজ্যে কোনও একটা ভালো ঘটনা ঘটেছে বলেই দাবী অনেকের।
গত কয়েক বছরে শাসক বিরোধী তরজায় রাজ্যের উন্নয়ন যে ক্রমাগত ধাক্কা খাচ্ছে তা স্পষ্ট। এই অবস্থায় শাসক বিরোধী তরজা মিটিয়ে রাজ্যের উন্নয়নে প্রত্যেকে ঝাঁপিয়ে পড়লে তা রাজ্যবাসীর কাছে মঙ্গলজনক হবে সন্দেহ নেই। সূত্রের খবর, এদিনের সৌজন্য সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী দলনেতা সহ বিধায়কদের কাছে জানতে চান আপনারা কেন সরকারী অনুষ্ঠানে আসেন না। রাজ্যের উন্নয়নে সবার থাকা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
শুভেন্দুকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারের বিষয়ে বিজেপির মুখপাত্র শমিক ভট্টাচার্য জানান, “রাজ্যে সমস্ত জনপ্রতিনিধির মধ্যে এই সৌহার্দ্য বজায় থাকবে এটাই তো হওয়া উচিত ছিল। আজ বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু রাজ্যপালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিরোধী দলনেতাকে পেছনের সারিতে কেন বসার ব্যবস্থা করা হল। মুখ্যমন্ত্রীর পরেই যেখানে বিরোধী দলনেতার স্থান সেখানে তাঁকে কিভাবে অসম্মান করা হল। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির বাড়ির সামনে ক্রমাগত অভব্য আচরণ কেন চলবে”।
অন্যদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদারের দাবী, “রাজ্যপালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সামান্য বিষয়কে বড় করে দেখা হল। এখানে শুভেন্দু তথা বিজেপির নেতৃবৃন্দ যদি এই সৌহার্দ্যবোধ বিষয়টি বুঝতে পারেন তা হলে তা রাজ্যবাসীর জন্য যথেষ্ট ভালো হবে”।