নিউজবাংলা : সেই ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে থেকে শুরু হয়েছিল তিক্ততা। তারপর প্রতিটা দিন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মুখমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী (Mamata Banrjee) ও শুভেন্দু অধিকারী ( Suvendu Adhikari)’ র মধ্যেকার দ্বন্দ্ব।
তবে আজ সব হিসেব নিকেশ বদলে দিল বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর একটা মন্তব্য, শুভেন্দুর একটি মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মমতা আবেগতাড়িত হয়ে জানান, “এক সময় আমি যাকে ভাই বলতাম সে এমনটা বলল”। এরপরেই হঠাৎই বদলে যায় রাজ্যের দীর্ঘদিন ধরে চলা শাসক বিরোধী দ্বন্দ্বের আবহ।
এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেন, “প্রশাসনিক বৈঠকে বিরোধী নেতাদের ডাকা হলেও কেউ আসেন না। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যপালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে না এলেন বিরোধী দলনেতা, না এলেন কোনও বিজেপি বিধায়ক। বিমান বসু এসেছিলেন তাঁকে ধন্যবাদ”। এরপরেই শুভেন্দু রাজ্যপালের অনুষ্ঠানে তাঁকে পেছনের সারিতে বসানোপ্রসঙ্গের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন এই রাজ্যের সরকার তো বাই দা পার্টি, অফ দা পার্টি, ফর দা পার্টি হিসেবেই চলছে”।
তখনই মমতার তাৎপর্যপূর্ণ উক্তি, “ভাইয়ের মতো স্নেহ করতাম যাকে সে এই কথা বলল”। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার কিভাবে চলছে বাইক দা এজেন্সী, অফ দা এজেন্সী, ফর এজেন্সী”। বিধানসভার প্রথম পর্ব শেষ হতেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কেবিনে চলে যান। এরপরেই মার্শাল এসে শুভেন্দুকে জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে চায়ের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। পাল্টা শুভেন্দু জানান তিনি একা যাবেন না। তাঁরা ৩ জন যাবেন। এতে রাজি হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী।
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর চেম্বারে যান শুভেন্দু সহ অগ্নিমিত্রা পল, মনোজ টিগা। সেখানে মিনিট খানেক সৌজন্য সাক্ষাৎকারের পরেই বিধানসভার দ্বিতীয় অর্ধের বেল বেজে যায়। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী কেবিন থেকে বেরিয়ে যান। পরে শুভেন্দু জানান, “আমার চা খাওয়া হয়ে ওঠেনি“।
শুভেন্দু জানান, “আমি দুটো প্রশ্ন করেছিলাম, শুধু তৃণমূলের লোকেদের ডাকেন, আমি এই ব্যবস্থা বন্ধ করুন। উনি বলেন আমি তো অধীর চৌধুরীকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। আমি বলি ওনাকে নিয়েই চলুন তাহলে। এরপরেই আমি বলেছি আপনি যদি মালা রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডাকেন তাহলে বিজেপির সাংসদরা বাদ পড়বে কেন। তাছাড়া আপনি নিজেই জানেন আপনার পঙ্কজ ব্যানার্জি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা বুদ্ধ বাবুর কাছ থেকে ক্যাবিনেট মিনিষ্টারের সম্মান পেয়েছেন। আমি ক্যাবিনেট মিনিষ্টার হয়েও পেছনের সারিতে কেন”।
তবে শুভেন্দু স্পষ্ট করে দেন, আজকের পর রাজ্য সরকার যদি সৌজন্যের রাজনীতিতে পথ চলতে চায় তাহলে তাঁকে এরজন্য স্বাগত জানাই। আমি তো নিজেও আজকে প্রস্তাবে বলেছি ভোটের সময় রাজনীতি বাকী সারা বছর আমরা মানুষকে সেবা দিই। আপনি রাজনীতির বাইরে গিয়ে মানুষের জন্য কাজ করুন, সবাইকে তাঁদের মর্যাদা দিন, আমরা সঙ্গে থাকব”।
আমাদের প্রকাশিত সংবাদ কেমন লাগছে, আপনার মূল্যবান পরামর্শ নীচের কমেন্ট বক্সে লিখে জানান।