নন্দীগ্রাম : সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা দু’বার নেওয়ার পরও ফেরতের নোটিস উপেক্ষা করায় নন্দীগ্রামে ৪৯জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হল। এর মধ্যে অনেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও কর্মী। তাঁদের বাড়ি নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের (Nandigram) বিরুলিয়া, বয়াল-১ ও ২, আমদাবাদ-১ ও ২ এবং খোদামবাড়ি-১ ও ২ ব্লক এলাকায়। গত ২৩ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বিডিও অখিলেশ সাহা নন্দীগ্রাম থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিপূরণ বাবদ তাঁরা প্রত্যেকে প্রথমবার ২০ হাজার হাজার টাকা পান। তারপর আবারও একই ক্ষতির জন্য কেউ পাঁচ হাজার আবার কেউ ২০হাজার টাকা পেয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে সিএজি অডিট করার সময় এরকম কয়েক হাজার নাম সামনে আসে। তাঁদের প্রত্যেকের বাড়িতে নোটিস পাঠানো হয়। অনেকেই দ্বিতীয়বার নেওয়া টাকা ফেরত দিয়েছেন। আবার বড় অংশই টাকা ফেরাননি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩-১৮ সাল পর্যন্ত নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বয়াল-২ পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন সখীরানি গায়েন। তাঁর স্বামী ফণীন্দ্রনাথ গায়েন দু’দফায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় উমপুনের ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। নোটিস করার পরও অতিরিক্ত টাকা না ফেরানোর প্রাক্তন প্রধানের স্বামীর বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। যদিও মাস দেড়েক আগে ফণীন্দ্রনাথবাবু মারা গিয়েছেন।
ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ আসদতলার পঞ্চায়েত সদস্যা মাফুজা বিবি৷ তাঁর স্বামী শেখ আজিজুল তৃণমূলের বয়াল-২ অঞ্চল কমিটির সদস্য৷ আজিজুলের অ্যাকাউন্টেও দু’বার ক্ষতিপূরণের হাউসবিল্ডিং গ্রান্টের(এইচবি) টাকা ঢুকেছে। নোটিস করার পরও টাকা না ফেরানোয় ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধেও এফআইআর হয়েছে।
বয়াল-১ এবং ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এরকম ১৫জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন বিডিও। তাঁরা প্রায় সকলেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মী বলে পরিচিত। বয়াল-২ অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ওদের প্রত্যেককে টাকা ফেরাতে বলা হয়েছিল।
নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের আমদাবাদ-২ অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি শেখ কাজেহারের ভাইয়ের স্ত্রী মমতাজ বিবি দু’বার ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। সাতেঙ্গাবাড়ি গ্রামে বাড়ি। টাকা না ফেরানোয় ওই তৃণমূল নেতার ভাইয়ের স্ত্রীর বিরুদ্ধেও এফআইআর হয়েছে। সাতেঙ্গাবাড়ি গ্রামের এরকম সাতজনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে।
আমদাবাদ-১ পঞ্চায়েতের মোট ২০জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন বিডিও। শেখ কাজেহার বলেন, সোমবার বিডিও অফিসে যাব। যাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে তাঁদের টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে। ওই ব্লকের বিরুসিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ছ’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। খোদামবাড়ি-১ ও ২ পঞ্চায়েত এলাকার মোট আটজনের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম থানায় এফআইআর হয়েছে।
বিডিও বলেন, মোট ৪৯জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। আগে তাঁদের নোটিস দেওয়া হয়েছিল। এফআইআর হতে পারে বলে পুলিসের পক্ষ থেকেও সতর্ক করা হয়েছিল। তারপরও টাকা না ফেরানোয় এফআইআর করেছি।