ছবি- প্রতিকি |
নিউজবাংলা ডেস্ক : দিন কয়েক আগেই সিবিআইয়ের ডাকে কলকাতায় আসার সময় লালবাতি গাড়ি ব্যবহার করে চূড়ান্ত বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডল। এবার সেই একই ভাবে লালবাতি ব্যবহার করে পূর্ব মেদিনীপুরে ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ উঠেছে রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষের বিরুদ্ধে।
কখনও তিনি গেলেন কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত অফিসে, আবার কখনও পরিচিতের বাড়িতে। প্রসঙ্গতঃ পূর্ব মেদিনীপুরে কয়েক মাস ধরেই সক্রিয়তা বাড়াচ্ছেন তন্ময়। জেলার নানা প্রান্তে তাঁর ছবি দেওয়া ব্যানার, ফেস্টুন চোখে পড়ছে। সম্প্রতি কিছু দলীয় কর্মসূচিতেও তাঁকে দেখা গিয়েছে। এই নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
সেই তন্ময়ই সোমবার সকাল থেকে কাঁথি শহর এবং সংলগ্ন এলাকায় ঘুরেছে পুলিশের লাল-নীল বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে। কাঁথি-১ ব্লকের গিমাগেড়িয়াতে একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পাশে এক শিক্ষক এবং পরে দিঘা বাইপাস সংলগ্ন পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত অফিসে যান তিনি। তাঁর সঙ্গে একটি লাল বাতি লাগানো এবং আরেকটি লাল-নীল বাতি লাগানো গাড়ি ছিল। দুটি গাড়িতেই লেখা ছিল পুলিশ। এমন গাড়ি সাধারণত ভিআইপিদের পাইলট কার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
একটা সময় মন্ত্রী, আমলাদের গাড়িতে লালবাতি লাগানো হত যথেচ্ছ ভাবে। তবে পরবর্তীকালে ইচ্ছেমতো লালবাতির ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি এই নিয়ে নির্দিষ্ট গাইডলাইন প্রকাশ করে পরিবহন দফতর। সম্প্রতি বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গাড়িতে লাল বাতি লাগানাে নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠেছিল। তা নিয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রী পদমর্যাদার কারা গাড়িতে লালবাতি কিংবা নীল বাতি লাগাতে পারেন, এমন ১৪ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে পরিবহণ দফতর। স্বভাবতই সেই তালিকায় নেই তৃণমূলের কোনও রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের নাম। ফলে, বিষয়টি জানাজানি হতেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তন্ময় কি তাঁর পদমর্যাদায় লাল বাতি লাগানো পুলিশের গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন?
তন্ময়ের ব্যাখ্যা, “আমি চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিশন, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং কেবল নেটওয়ার্ক মনিটরিং কমিটির সদস্য। ব্যক্তিগতভাবে মন্দারমণি ঘুরতে গিয়েছিলাম। একেবারে ব্যক্তিগতস্তরে অসুবিধার কারণে পুলিশের একটি গাড়ি চেয়েছিলাম। তবে লাল বাতি লাগানো পুলিশের গাড়ি কেন ছিল তা জানি না।”
কাঁথি থানা সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, পুলিশের কোনও গাড়ি এ ভাবে দেওয়া হয়নি। কাঁথির এসডিপিও সোমনাথ সাহাও বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে কেউ অসুবিধায় পড়লে পুলিশের গাড়ি দিয়ে সাহায্য করা হয়ে থাকে। তবে লাল বাতি লাগানো পুলিশের গাড়ি কোথা থেকে এল আমাদের জানা নেই।”
রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির জবাব, “উনি যদি পাইলট কার বা লালনীল বাতি লাগানো গাড়ি চেপে ঘুরে বেড়ানোর অধিকার অর্জন করেন তবে নিশ্চিতভাবেই ঘুরতে পারবেন। তা না হলে বলব, উনি যেন এমন কাজ আর না করেন। এ নিয়ে বিধতে ছাড়ছেনা বিরোধীরা। দক্ষিণ কাঁথির বিজেপি বিধায়ক অরূপ দাস বলেন, “তৃণমূল কখনও কোনও নিয়ম-নীতির ধার ধারে না। ওদের কাছে এমন আচরণই প্রত্যাশিত।”
–সৌজন্যে আনন্দবাজার পত্রিকা
মোবাইলে নিউজ আপডেটপেতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিন, ক্লিক করুন Whatsapp