নিউজবাংলা : প্রথম থেকেই বাংলার শিক্ষা শিবির বিতর্কিত জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে অগণতান্ত্রিক ভাবে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার কেন্দ্রীয় প্রবণতার প্রতিবাদে সরব। এ বার পিএইচ ডি-র নতুন নিয়মবিধিও সেই বিরুদ্ধতার আওতায় এসে গেল। পিএইচ ডি করার ন্যূনতম মান এবং পদ্ধতির বদল নিয়ে ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তাদের নতুন ‘রেগুলেশন’ বা নিয়ম বিধি ওয়েবসাইটে দিয়ে দিয়েছে।
জাতীয় শিক্ষানীতির বিভিন্ন নির্দেশিকার বিরুদ্ধে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সর্বভারতীয় শিক্ষক সংগঠন আইফুকটো তিন দিন ধরে দিল্লিতে ইউজিসি-র দফতরের সামনে ধর্না বিক্ষোভের যে-কর্মসূচি নিয়েছে, সেখানে পিএইচ ডি-র নয়া নিয়মেরও প্রতিবাদ করা হবে। আজ, বুধবার থেকে ওই ধর্না চলবে শুক্রবার পর্যন্ত।
নতুন নিয়মাবলি অনুযায়ী চার বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রমে ৭৫% নম্বর পেলে সরাসরি পিএইচ ডি করা যাবে। চার বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রমের সঙ্গে এক বছরের স্নাতকোত্তরের পাঠ্যক্রম করলেও পিএইচ ডি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে নিয়মাবলিতে। পরিবর্তিত বিধিতে পিএইচ ডি-র থিসিস বা গবেষণাপত্র জমা দেওয়ার আগে কোনও ‘রেফার্ড জার্নাল’ বা নির্দিষ্ট তালিকাভুক্ত পত্রে গবেষণাভিত্তিক রচনা প্রকাশ আবশ্যিক নয়।
এই সব বিষয় নিয়ে শিক্ষা শিবিরে একাংশ ইতিমধ্যেই আপত্তি জানাতে শুরু করেছে। আইফুকটো-র সভাপতি এবং রাজ্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ওয়েবকুটা) সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য বলেন, “এই নিয়ে আমরা প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছি। দিল্লির ধর্নাতেও এই নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হবে।”
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষক সংগঠন আবুটার সহ-সভাপতি এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক তরুণকান্তি নস্কর মঙ্গলবার বলেন, “এই নিয়মবিধিতে চার বছরের ডিগ্রিধারীদের পিএইচ ডি করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। চার বছরের ডিগ্রি কোর্সের কথা বলা হয়েছে জাতীয় শিক্ষানীতিতে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।”
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিতত্ত্বের শিক্ষক পার্থিব বসু বলেন, “চার বছরের স্নাতকের পরে মাত্র এক বছরের স্নাতকোত্তর করে পিএইচ ডি করার ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়টি সমর্থনযোগ্য নয়। গবেষণার ক্ষেত্রে দু’বছরের স্নাতকোত্তর পড়াশোনার গভীরতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সেই গভীরতা স্নাতকোত্তর স্তরে মাত্র এক বছর পঠনপাঠনে অর্জন করা কষ্টকর।”