নিউজবাংলা ডেস্ক : রাজ্য জুড়ে স্কুলগুলিতে ভুয়ো শিক্ষাকর্মীর হদিশ মিলেছে সম্প্রতি। প্রায় ১৬৯৪ জন গ্রুপ-ডি কর্মী বেআইনিভাবে সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগপত্র পেয়েছেন বলে হাইকোর্টে জানিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেই তালিকা জেলায় জেলায় চলে এসেছে। রিপোর্টে প্রকাশ, এই অবৈধ নিয়োগ সব থেকে বেশী হয়েছে দুই মেদিনীপুরেই।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই এমন অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত গ্রুপ ডি’র সংখ্যা ৩৬০জন। অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন অবৈধ চাকরীপ্রাপকের সংখ্যা ২৯৮ জন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। মঙ্গলবার থেকে রাজ্য জুড়ে এই সমস্ত অবৈধ নিয়োগপাপ্তদের আদালতের চিঠি পাঠানো শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গতঃ লিপিকা সাধুখাঁ নামে এক গ্রুপ ডি প্রার্থীর মামলার জেরে বিষয়টি সামনে এসেছিল। তাঁর দাবি ছিল, ২০১৬ সালের আরএলএসটির (নিয়োগ পরীক্ষা) ওয়েটিং লিস্টে তাঁর নাম তিন নম্বরে থাকা সত্ত্বেও তিনি ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি। সিবিআই গাজিয়াবাদ থেকে যে হার্ডডিস্ক উদ্ধার করে, তাতে দেখা যায়, গ্রুপ ডিএর ১৬৯৮ জন প্রার্থীর ওএমআর শিটের নম্বরে গরমিল করা হয়েছে।
বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে মামলাটি ওঠে। তাতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জানান, স্কুল সার্ভিস কমিশন ১৬৯৪ জনের নাম সুপারিশ করেছিল। সেই অনুযায়ী পর্ষদ ১৬৯৪ জনকেই নিয়োগ দেয়। এই তথ্য পেয়ে বিচারপতি বসু মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন, এই প্রার্থীদের তিনি বরখাস্ত করার পক্ষে।
তবে, শেষপর্যন্ত লিখিত নির্দেশে তিনি এই প্রার্থীদের বক্তব্য পেশের একটি সুযোগ দেন। ওই প্রার্থীদের তালিকা কমিশনকে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। শিক্ষাদপ্তর এবং কমিশনের তরফে তা ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। আদালতের আরও নির্দেশ ছিল, সেই তালিকা দেখে প্রার্থীদের মামলার নোটিসের বিষয়ে চিঠি পাঠিয়ে ওয়াকিবহাল করবেন ডিআইরা। সেই অনুযায়ীই ডিআইরা পদক্ষেপ করছেন।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পর্ষদ থেকে তালিকা জেলায় আসার পর তিনটি কর্মদিবসের মধ্যে চিঠি ইস্যু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। চিঠি আসার পরই শনি, রবি ও বড়দিনের ছুটি থাকায় স্কুলে স্কুলে চিঠি যায়নি। আজ, মঙ্গলবার চিঠি পাঠানো হবে। এর আগে দু’দফায় বিতর্কিত তালিকায় নাম থাকা শিক্ষকদের তথ্য তলব করতে প্রধান শিক্ষকদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেটাও তিনশো স্কুলে পাঠানো হয়েছিল। বিভিন্ন স্কুল থেকে রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে।
সুত্রের খবর, কোনও কোনও স্কুলের পরিচালন কমিটি রিপোর্ট না দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষকদের চাপ দিয়েছিল। যদিও শেষপর্যন্ত সেই রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। এবার অবশ্য বেআইনিভাবে সুপারিশ পেয়ে নিয়োগ হওয়া চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের অবহিত করতেই চিঠি। ২০১৮ সালে তাঁরা নিয়োগপত্র পেয়ে স্কুলে যোগ দেন। স্কুলে দরজা, জানালা খোলা ও বন্ধ করা, ফাইলপত্র বওয়া, ঘণ্টা দেওয়ার মতো কাজ করেন ওই কর্মীরা।