নিউজবাংলা : রাজ্যে শিক্ষক ও অশিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়ার ‘সুযোগ’ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ হুঁশিয়ারির সুরে বিচারপতি এও জানিয়েছিলেন, ‘যাঁরা দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের বলছি, স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিন। তাহলে বিষয়টি এখানেই সমাপ্ত হবে। যাঁরা ইস্তফা দেবেন না তাঁরা ভবিষ্যতে যাতে কোনও সরকারি চাকরি করতে না পারেন সেই ব্যবস্থা করা হবে।’ বিচারপতির এহেন হুঁশিয়ারির পরও বেআইনিভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের টনক নড়েনি সেভাবে।
সূত্রের খবর, সময়সীমার মধ্যে নবম দশম, একাদশ দ্বাদশ থেকে শুরু করে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, কোনও স্তরেই স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চিঠি জমা পড়েনি মধ্য শিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে এই সংক্রান্ত বিশেষ কোনও তথ্য নেই। ইস্তফা দিলে নিয়মমতো সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মারফত তা জেলা কার্যালয়ে জমা পড়ার কথা। জেলা স্তরেও স্বেচ্ছায় ইস্তফা সংক্রান্ত তেমন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চিঠি জমা পড়েনি বলেই খবর।
তবে বিচারপতির গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে সোমবার জলপাইগুড়ির বানারহাট উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম-দশম বিভাগের জীবনবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষিকা অনন্যা মহাপাত্র ইস্তফা দিয়েছেন। অনন্যা মহাপাত্র ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। অনন্যা জানিয়েছেন, যেহেতু স্কুল সার্ভিস কমিশন আদালতকে তাদের ভুলের কারণে চাকরি হওয়ার বিষয় জানিয়েছে, তাই তিনি পদত্যাগ করছেন।
সিবিআই রিপোর্ট অনুযায়ী ৮,১৬৩ জনকে বেআইনি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২৮ সেপ্টেম্বর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে রিপোর্ট দিয়ে সিবিআই জানায়, পুরো সাদা খাতা বা গুটিকয়েক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে নবমদশম একদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকতা এবং গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি বিভাগে নিয়োগ সংক্রান্ত মেধা তালিকায় জায়গা পেয়েছেন অন্তত আট হাজার জন।
রিপোর্টে উল্লেখ, নবম-দশমে ৯৫২ জন, একদশদ্বাদশে ৯০৭ জন, গ্রুপ-সি ৩৪৮১ জন এবং গ্রুপ-ডি পর্যায়ে ২৮২৩ জন ওএমআর জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন। বেআইনি নিয়োগপ্রাপ্তদের এই তালিকা এসএসসিকে যাচাইয়েরও নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। ফলে বল এখন আদালতের কোর্টে। ১৬ নভেম্বর এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এই বেআইনি নিয়োগপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আদালত আপাতত কী ব্যবস্থা নেয়, এখন সেদিকেই নজর সব পক্ষের।