নিউজবাংলা : ২০১২ সালে দিল্লির ‘অনামিকা’ ধর্ষণ ও খুনের মামলায় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত তিনজনকে সোমবার বেকসুর খালাস করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ১৯ বছরের ওই কিশোরীকে ধর্ষণ-খুনের মামলায় তিনজনকে ফাঁসির সাজা শুানিয়েছিল নিম্ন আদালত। দিল্লি হাইকোর্টেও তাদের সাজা বহাল থাকে। হাইকোর্ট দোষী সাব্যস্ত ওই তিনজনকে ‘রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো শিকারি পশু’ বলে মন্তব্য করেছিল।
ঘটনাচক্রে, নির্ভয়া কাণ্ডের কয়েক মাস আগে ধর্ষণ খুনের এই ঘটনা ঘটেছিল। নির্যাতিতাকে ‘অনামিকা’ বলা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট এদিন তিনজনকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন নির্যাতিতার মা-বাবা। তাঁদের আক্ষেপ, মেয়ে সুবিচার পাবে, এই আশায় এখানে এসেছিলাম। কিন্তু এই বিচার ব্যবস্থা অন্ধ। তবে আমাদের ১১ বছরের এই আইনি লড়াই থামবে না। ওই তিনজন আদালতকক্ষেও আমাদের হুমকি দিয়েছিল। কাঁদতে কাঁদতে নির্যাতিতার মা বলেন, এতদিন ধরে আমরা অপেক্ষা করছিলাম। আর বেঁচে থেকে লাভ নেই।
ধর্ষণ-খুনের এই মামলায় ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির নজফগড় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। পরিবারের অভিযোগ ছিল, কিশোরীটিকে অপহরণের পর ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। অপহরণের কয়েক দিন পর হরিয়ানার রেওয়ারি জেলায় চাষের খেত থেকে মেয়েটির দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে পুলিসের প্রথম টার্গেট ছিল একটি লাল রঙের ইন্ডিকা গাড়ি খুঁজে বের করা।
সেই গাড়ির সূত্রেই প্রথমে পুলিস রাহুলকে গ্রেপ্তার করে। সে দোষ স্বীকার করে নেয়। তারপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রত্যেকেই দোষ স্বীকার করে নেয়। ঘটনার দু’বছর পর ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে রবি কুমার, রাহুল ও বিনোদ নামে তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা শোনায় দিল্লির একটি আদালত। পরে দিল্লি হাইকোর্টও তাদের ফাঁসির সাজা বহাল রাখে।
হাইকোর্টের রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল ওই তিনজন। লঘু সাজার আবেদন জানায় তারা। শীর্ষ আদালতে পুলিস এর বিরোধিতা করেছিল। উল্টোদিকে সাজা কমানোর আবেদনের স্বপক্ষে তিনজনের আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, এদের কারও অতীত কোনও অপরাধের রেকর্ড নেই। তারা প্রত্যেকেই ভালো পরিবারের সদস্য। অবশেষে তথ্য প্রমাণ বিচার করে প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত, বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাট ও বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চ সাজা না কমিয়ে এদিন তিনজনকেই একেবারে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিল।
- সংবাদ সূত্র, বর্তমান পত্রিকা