নিউজবাংলা : ভারতীয়দের থেকে মাসে এক লক্ষ করে ভিসার আবেদন গ্রহণ করবে আমেরিকা। বছরে ১২ লক্ষ। এরকমই বিস্ময়কর টার্গেট নেওয়া হয়েছে। কোভিডকালের আবার পর আন্তর্জাতিক উড়ান সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে গেলেও গত দেড় বছরেও আমেরিকার ভিসা নীতি স্বাভাবিক হয়নি।
কূটনৈতিক সম্পর্কেও এই সমস্যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তারই সঙ্গে রাশিয়া থেকে ভারত সস্তায় অশোধিত তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমেরিকার পরোক্ষ হুঁশিয়ারি সম্পর্কে আরও শীতল ছায়া ফেলে। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের শুধুই তেল নয়, একঝাঁক অস্ত্র চুক্তিও হয়েছে।
রাশিয়া থেকে তেল কেনার আগেই রাশিয়া থেকে এস ৪০০ মিসাইল সিস্টেম ভারত ক্রয়ের চুক্তি করা নিয়েও আমেরিকা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ভারত প্রতি ক্ষেত্রেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছে, ভারত সর্বাগ্রে দেশের স্বার্থ দেখবে। বস্তুত প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সখ্যতা ছিল নজরকাড়া।
কিন্তু আমেরিকায় ডেমোক্র্যাট সরকার আসার পর থেকেই নয়া প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও মোদির সেই সখ্যতা দেখা যায়নি। বরং সম্পর্কের তিক্ততা প্রকাশ্যে এসেছে একাধিকবার। আর ভারতের কয়েক লক্ষ ভিসার আবেদন আটকে রাখা হয়েছে। মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও ভিসা পাওয়া যায়নি। এইচ ওয়ান বি, এল, বিজনেস কিংবা ট্যুরিস্ট, প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই সমস্যার চরম নাজেহাল হতে হচ্ছে ভারতীয়দের।
বৃহস্পতিবার ভারতে থাকা মার্কিন দূতাবাস বলেছে, ভারত এখন ওয়াশিংটনের কাছে সবথেকে বড় অগ্রাধিকার। তাই ভিসা জটিলতা নিয়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল তা মিটিয়ে এবার আমরা বরং ভারতীয়দের বিশ্বের মধ্যে সবথেকে বেশি ভিসা দেব। মাসে এক লক্ষ করে ভিসার আবেদন অনুমোদন করা হবে। মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, শুধু এই কারণেই ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের কনস্যুলেট অফিসে কর্মী সংখ্যা অনেক বাড়ানো হচ্ছে। যাতে ভিসার আবেদন ও অনুমোদনের সময়সীমা আরও কমে আসে।
মার্কিন ভিসা প্রাপ্তিতে ভারতের স্থান মেক্সিকো এবং চীনের পর। এখন আমেরিকা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চীনের তুলনায় ভারতকে বেশি ভিসা দেওয়া হবে। ২০২৩ সালের মধ্যেই ভারত উঠে আসবে দ্বিতীয় স্থানে। অর্থাৎ মেক্সিকোর পরই। বিশেষ পরিবর্তন আনা হচ্ছে যারা আগেই ভিসা পেয়েছিল এবং সেই ভিসার সময়সীমা সমাপ্ত হয়েছে, এমন ভিসা-ধারকদের ক্ষেত্রে।
তাদের পুনরায় আবেদনের ক্ষেত্রে আর ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে না। ড্রপ বক্স সুবিধা দেওয়া হবে। ভারতের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, মার্কিন ভিসা নীতি যদি সত্যিই জটিলতা কমাতে সমর্থ হয়, তা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও স্বাভাবিক করবে কোনও সন্দেহ নেই।